মহামানব
মহামানব নও জানি
।
তবে সুদ্রিপ্ত
পাহাড়ের মতো
আকাশে ডানা মেলে
ওঠা
অগুন্তি পায়রার
মতো ,
একমাত্র আছো
তুমিই ~
সেই মহামানবের
কাছাকাছি ।
আঁটসাঁট অট্টালিকার
এ জঞ্জাল্ময় শহরে ,
খুবই বেমানান
তুমি ।
এ শহরে তো বিত্ত
আর অলঙ্কারের দৌড়ারাত্ত,
মেকী মুখ আর
অশুভ হাসির পায়তারা ,
এখানে স্টক আর
আই টি বোনাসের
সরস আলোচনায়
মুখর চারিদিক –
অথচ এখানেও
,
স্পন্দনহীন অঙ্কময়
অসাড় সামাজিকতায়
হৃদকম্পন খুঁজে
বেড়াও তুমি ;
কতখানি হলে হৃদয়ের
বিস্তৃতি –
তাকে মহামানব
বলা যায় ?
তা পৃথিবীর কতখানি
স্থল, আর কতখানি জলের সমান ?
এ শহরের ঘুনের বাতাস ,
ছুয়নি তোমাকে
এখনো ।
এখানেই –
তুমি হাইতির দরিদ্রর জন্য উডে দাড়াও ,
গাজার কান্না চোখে নিয়ে
দুঃস্থ মানবতার জন্য ছুটে বেড়াও
দগন্ত থেকে দিগন্তে ;
কখনো আদিম সভ্যতার স্পর্শ নিয়ে
কেনিয়ার তুরকানা মালভূমির কাছে –
মাসাই তরুনের সাথে লম্ফ দাও –
অসীম আকাশের দিকে ;
অথবা কখনো
উদবাস্তুর বেদনা বুকে নিয়ে
অকপটে ফিরে যাও পূর্ব বঙ্গের জন্মভুমে –
বাঙলার জন্য অনেক অহংকার তোমার
একমাত্র সাম্যের কাছে মাথা নত করো তুমি ।
মহামানব শব্দের ভেতর তবে কী
কিছুটা আছে দাম্ভিকতা কোথাও ?
তবে তো এ পদবী তোমার নয় –
তুমি আছো সর্বদা সাধারণ মাঝে ।
তা হলে কি বলবো তোমায় ?
বন্ধু, গুরু, সহ যোদ্ধা – বা অন্য কিছু ?
এই নির্বিকার ভাবলেশহীন পৃথিবীকে
তাই বলে যেতে চাই,
যেমন নির্দ্বিধায় তুমি বলে দাও –
আমি জীবন দিতে রাজি, জীবন নিতে নয় –
আমি চিনতাম মানুষকে এক,
পৃথিবীর অট্টালিকা আর কংক্রিটের মাঝে,
অকপটে চপল হীন হেঁটে গেছে সে,
মানবতার টানে , মানবতার প্রানে ।
মহামানব হয়তো নয় সে জানি ,
তবে আকাশের মত গাড় নীল আর
সমুদ্রের সরব উচ্ছাস নিয়ে ,
প্রান্ত থেকে প্রান্তে বলে যাবো
বেচে আছি যতদিন –
আমি চিন্তাম মানুষকে এক –
মানবতার সকল শ্রেষ্ঠ সকাল নিয়ে
যে গড়েছিল তার পৃথিবীর প্রহর –
প্রতিটি ঘণ্টা অক্লান্ত কৃষকের মতো ,
সে বুনে গেছে এই পৃথিবীর কোণায় –
এক অতি মানবের বিস্তৃত তৃণভূমি ।।
( কবিতাটি পরম শ্রদ্ধেয় ডাঃ শক্তি দাস কে শ্রদ্ধা জানিয়ে
লেখা )
১১/২২/২০১৫
সান ফ্রান্সিস্কো ।।