Friday, March 24, 2017

একাকীত্বের পাহাড় ঃ বর্ষার বিষণ্ণ পন্তিমালা









                                                                     photo credit : Raj Hameed


একাকীত্বের পাহাড় ঃ বর্ষার বিষণ্ণ পন্তিমালা


কী বেদনা আঁকড়ে আছো –
এতোকাল তুমি ?
রাত্রির নিঃশব্দে , বলয়ে বলয়ে
সময়ের বাঁকে বাঁকে ?
কী  আর্তনাৎ জমাট বেঁধে আছে তোমার
আঁটসাঁট পাথরের খাঁজে খাঁজে –
বেড়ে ওঠা পাহাড়ের শীর্ষ চূড়ায় ?
হাজার বছরের নিষ্ঠুর বাতাস ,
সামাজিক অর্থহীন কোলাহলের মতো –
তোমার দৃঢ় বুক চিঁড়ে গেছে ।
অমলিন অম্লান তুমি
অবিচল নিশ্চল দাড়িয়ে –
কাপালি সাগরের দস্যিপনা দেখে গেছো –
কাজল কালো মেঘ, নির্ঝর বৃষ্টি ,
আর দুরন্ত ঝর্ণার হৃদয় ভুলানো খেলায় –
তুমি ভুলিয়ে রেখেছো –
এক অগভীর পৃথিবীকে ;
রোদের বিছানো হাসি
যেমন ঢেকে রাখে –
বিষণ্ণতার আলোহীন উপত্যকা ।

হাজার বছরের বিস্বাদের ঝড়
নির্বিকার বুকে নিয়ে ,
স্থবির জীবন আর কৃত্তিম ভালোবাসা
একাকার কোরে –
এ কেমন একাকিত্তের পাহাড় গড়েছো তুমি ?
তুমি আমি যেখানে নেই,
নেই স্বপ্নের আকাশ ,
আছে শুধু স্মৃতির আঁকড়ে ধরা পাথর ,
আর  বিশাল সময়- পাহাড়ের দুপাশে –
আমাদের নীরব একাকিত্তের বিষণ্ণ চীৎকার ।।

          নাপালি কোস্ট, কাউয়াই , হাওয়াই দীপপুঞ্জ ।
                                                নভেম্বর, ২০০৯ ।।
                                                               (অনুপ্রেরণা ১৯৮৫ সালের মুসৌরীর ব্রমন  থেকে নেয়া )

Monday, March 20, 2017

সুখ ঃ বর্ষার বিষণ্ণ পঞ্চতিমালা ।।











                                        photo credit : Raj Hameed : Kaanapali Beach, Maui . 




                             সুখ ঃ বর্ষার বিষণ্ণ পঞ্চতিমালা

আমি জানি – তুমি সুখী নও ।
তুমি সুখী নও –
হয়তো বা সুখের নিবিড় ছোঁয়া
বসন্তের মৃদু বাতাসের সাথে ,
তোমার আঙ্গিনায়
মেলে বসবে না উৎসবের পশরা –
আর কোনদিন ।

হয়তো বা –
মিথ্যার এক বিশাল বলয়
ঘিরে থাকবে তোমার সকল অস্তিত্ব ।
তোমার দৃষ্টি, বৃষ্টির দুপুর, রোদেলা সন্ধ্যা –
সব কিছু –
আমার আর আমাদের স্মৃতির
আবিরের সাথে মিশে থাকবে একাকার –
বহুদিন, এমনকি অনন্তকাল ।
তোমার ভেতরের গোপন পৃথিবীতে
আমি আমরা বার বার উঁকি ঝুঁকি দেবো –
নির্ভেজাল রোববারে নিঃশব্দ ঘূর্ণির মতো,
দামী ডিনার সেটের ভাঙ্গা  দুটি প্লেটের মতো,
তোমার সব সুন্দর মুহূর্তগুলো –
আমার আর আমাদের স্মৃতির ভারে
তছনছ হয়ে যাবে – বার বার ;
চিলেকোঠায় নির্বাসিত ভালবাসার মতো
অনাহূত আমি –
আবির্ভূত হবো হঠাৎ হঠাৎ”
তোমার ভুলে থাকার নিঃসঙ্গ ছাদে ।

অনি, আমি জানি ,
আমি জানি তোমার মন খারাপের সমুদ্রে
আমার বিশাল ভালবাসা –
অনাবিল আনন্দ ভেলার মতো
ভেসে থাকবে চিরকাল ।।

                                                     সুখ / বর্ষার বিষণ্ণ পঞ্চতিমালা / 
                                            মুসৌরি, উত্তর প্রদেশ,ভারত । ১৯৮২ ।।

Saturday, May 7, 2016

তুমি চলে গেলে ঃ বর্ষার বিষণ্ণ পংতিমালা






তুমি চলে গেলে ঃবর্ষার বিষণ্ণ পংতিমালা


তুমি চলে গেলে, প্রিয়তমা,
আমিও আসবো না এখানে আর কোনদিন ।
ইস্পাতের কঠিন কপাট খুলে
স্মৃতির বিস্তৃত উদ্যানে
নিখুঁত বলে দিতে পারবো না
কোথায় ফুটেছে ফুল,
কোথায় জীবন্ত সবুজ
হয়ে উডেছে তৃণপাতা,
কোথায় অবলীলায় চলছে
স্বপ্ন প্রজাপতির বিচরণ –
আমি সব কিছু নির্ভার রেখে যাবো
যেখানে যেমন ঃ
বিবর্ণ বৃক্ষ ,
কুণ্ডলী পাকিয়ে বেঁড়ে ওঠা অবিন্যাস্ত লতাপাতা ,
ধূসর বিস্তীর্ণ জলাভূমি –
আমি সব রেখে যাবো –
সূর্যাস্ত নেমে যাবে সূর্যাস্তের মতো ,
সূর্যোদয় নেমে যাবে সূর্যাস্তের মতো ,
আমিও নিঃশব্দে ধীর নেমে আসবো
দীর্ঘশ্বাসের অন্ধকার বেয়ে –
বিষণ্ণ এক উপত্যাকার নির্জন গভীরতায় ,
যেখানে কোন জোনাকির আনা গোনা নেই ,
যেখানে শ্বাপদের পদচিহ্ন আঁকা আছে চারিদিকে –
সেখানেই হবে শেষ ঠিকানা আমার ;
তুমি যদি ফিরে না আসো -
তবে কোন ফুল ফুটবে না জেনো
এই ধরণীর বুকে ,
তুমি যদি ফিরে না আসো -
আনন্দের বেলাভূমিতে দাড়িয়ে
সূর্যোদয় দেখা হবে না আর কারো ,
সমুদ্রের সর্বশেষ নিস্তব্ধতায়
যেখানে জীবনের সকল আর্তনাঁদ
স্থবির হয়ে থাকে চিরকাল –
সেইখানে  -
বর্ষার ভারী বৃষ্টির মতো ,
হেমন্তের নিটোল বাতাসের মতো ,
জমাট হয়ে থাকবে
আমার হাজার বছরের গাড় বিষণ্ণতা –
সময়ের আঁটসাঁট ফ্রেমে বাঁধা
অন্তহীন কোন বেদনার রুপকথা হয়ে ।

অনি , এই জীবন থেকে তুমি চলে গেলে –
এই জীবন জুড়ে ,
জীবন আসবে না ফিরে – আর কোনদিন ।।


                                                         কোলকাতা / ১৯৮৩ ।।

                                               ( ফটো ক্রেডিট ঃ বেরি এভান্স )